Friday, March 8, 2019

আইপি অ্যাড্রেস কত প্রকার ও কি কি

IP Address

ইন্টারনেটে প্রতিটি হোস্টকে একক ভাবে চিন্হিত করার জন্য যে একটি লজিক্যাল অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় ইন্টারনেট প্রোটকল বা আইপি অ্যাড্রেস। প্রতিটি হোস্ট এর একটি করে ফিজিক্যাল অ্যাড্রেস থাকে যাকে বলা হয় ম্যাক অ্যাড্রেস । এটি ঐ ডিভাইস  তৈরিকারক কোম্পানি নির্ধারন করে দেয়।  এছাড়াও ইন্টানেটে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিটি হোস্ট এর আর একটি লজিক্যল অ্যাড্রেস এর প্রয়োজন হয়। এই লজিক্যল অ্যাড্রেসটিকে কলা হয় আইপি অ্যাড্রেস। ইন্টানেটে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিটি হোস্ট এর আইপি অ্যাড্রেস এর প্রয়োজন । আইপি অ্যাড্রেস ছাড়া কোন হোস্ট বা কম্পিউটার ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারবেনা । নেটওয়ার্কে প্রতিটি কম্পিউটারকে একে আপরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য আইপি অ্যাড্রেস এর পয়োজন আছে ।

আইপি অ্যাড্রেসকে তাদের কর্মক্ষম বৈশিষ্ট্য উপর ভিত্তি করে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়, যথা:
  • Unicast IP Addresses
  • Multicast IP Addresses
  • Broadcast IP Addresses

Unicast IP Addresses

ইউনিকাস্ট হল এমন একটি আইপি অ্যড্রেস যা নেটওয়ার্কে কোন একটি হোস্টকে একক ভাব চিহ্নিত করে। পংয়েন্ট টু পয়েন্ট কমিউনিকেশন এর জন্য এই ধরনের আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয়।নির্দিষ্ট কোন হোস্ট এর কাছে পাকেট ফরওয়ার্ড করার জন্য Unicast IP অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয়।উদাহরণ হিসেবে আমরা নিচের চিত্রের দিকে খেয়াল করি।

আমরা উপরের চিত্রে দেখতে পাচ্ছি এখানে একপি কম্পিউটার একটি সার্ভার এর সাথে কমিউনিকেট করতে চাচ্ছে।এখানে যে আইপি অ্যাড্রেসটি (192.168.0.150) ব্যবহার করা হয়েছে তা একটি Unicast অ্যাড্রেস।

Multicast IP Addresses

One টু Many কমিউনিকেশন এর জন্য Multicast অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয়।এখানে একটি গ্রুপ এর মাঝে কমিউনিকেট হয়ে থাকে। একটি Multicast প্যাকেট কেবল একটি কোন নেটওয়ার্কে এর Multicast গ্রুপটিই ঐ প্যাকেটি পেয়ে থাকে অন্য কেউ এই প্যাকেটটি অ্যাকসেস করতে পারবে না।উদাহরণ সরুপ আমরা নিচের চিত্রের দিকে লক্ষ করি।


এখানে রাউটার R1 একটি মাল্টিকাষ্ট প্যাকেট রাউটার R2 এর কাছে পাঠাচ্ছে যার Destination Address 244.0.0.9 এখানে রাউটার R2 প্যাকেটটি রিসিভ করতে পারবে এবং পড়তেও পারবে কিন্তু নেটওয়ার্কে থাকা অন্য কোন হোস্ট সেই প্যাকেটটি অ্যাকসেস করতে পারবে না।এখানে 244.0.0.9 একটি Multicast অ্যাড্রেস।

Broadcast IP Addresses

এটি হল Point-to-All কমিউনিকেশন। নেটওয়ার্কে যখন কোন হোস্ট একটি ব্রডকাষ্ট প্যাকেট পাঠায় তখন নেটওয়ার্কে থাকা সকল হোস্ট সেই প্যাকেটটি অ্যাকসেস করতে পারে। উদাহরণ সরুপ 192.168.0.0 255.255.255.0 নেটওয়ার্কের জন্য ব্রডকাষ্ট অ্যাড্রেস হল 162.168.0.255। যদি কোন হোস্ট 192.168.0.255 ডিস্টিনেশনে কোন প্যাকেট পাঠায় তাহলে সেই প্যাকেট নেটওয়ার্কের সকলেই অ্যাকসেস করতে পারবে।

এখানে রাউটার R1 নেটওয়ার্কের সকল হোস্ট এর সাথে কমিউনিকেট করতে চায় এজন্য সে ব্রডকাস্ট আইপি 192.168.0.255 ব্যাবহার করে নেটওয়ার্কে প্যাকেট ফরওয়াড করেছে।192.168.0.255 একটি ব্রডকাস্ট অ্যাসেড্রস।
ভার্সন অনশারে আইপি অ্যাড্রেসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:-
  1. IPv4 ( আইপি ভার্সন ৪)
  2. IPv6 (আইপি ভর্সন ৬)
এখানে আমরা শুধু IPv4 কি এবং এদের গঠন সর্ম্পকে আলোচনা করব ।

IPv4 আইপি ভার্সন ৪

Internet Protocol Version 4  এটি একটি  ৩২ বিটের আইপি অ্যাড্রেস। এবং এই আইপি অ্যাড্রেসকে ৪ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রত্যেক ভাগে রয়েছে ৮ টি করে বিট । আইপি অ্যাড্রেসকে সাধারণত ডেসিমেল নাম্বারে প্রকাশ করা হয়। যেমন 192.168.10.10 এটি একটি আইপি অ্যাড্রেস । এক আমরা চাইলে বাইনারিতে ও লিখতে পারি এবং ইউজ করতে পারি । তবে বাইনারিতে যেহেতু অনেকগুলি নাম্বার হয় তাই তা মনে রাখা  কঠিন হয় এজন্য আইপি অ্যড্রকে সাধারনত ডেসিমেলেই প্রকাশ করা হয়।  আইপি ভার্সন ৪ এর আইপি অ্যাড্রেসকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়। এর প্রথম অংশ হল নেটওয়ার্ক অংশ এবং শেষের অংশ হল হোস্ট অংশ। এই  আইপি অ্যাড্রেস শুরু হয় 0.0.0.0 থেকে এবং শেষ হয় 255.255.255.255 । এতে মোট 4294967296 টি আইপি অ্যাড্রেস রয়েছে। যা দিয়ে আমরা 4294967294 টি হোস্টকে চিন্হিত করতে পারব।


ক্লাস অনুসারে TCP/IP আইপি অ্যাড্রেসকে ৫টি ভাগে ভাগ করেছে যথা:
  1. Class A ( ক্লাস এ )
  2. Class B ( ক্লাস বি )
  3. Class C ( ক্লাস সি )
  4. Class D ( ক্লাস ডি )
  5. Class E ( ক্লাস ই )

Class A ( ক্লাস এ )

আমরা জানি যে আইপি ভার্সন ৪ কে ৪টি অকটেড এ ভাগ করা হয়  এবং প্রতিটি ভাগে রয়েছে ৮টি করে বিট। এবং এটাও জানি যে প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস এর দুটি অংশ রয়েছে নেটওয়ার্ক অংশ এবং হোস্ট অংশ। Class A আইপি অ্যাড্রেস এর প্রথম অকটেডটি হল নেটওয়ার্ক এর জন্য এবং শেষ ৩টি অকটেড হল হোস্ট এর জন্য । অর্থৎ প্রথম ৮টি বিট হল নেটওয়ার্ক এর জন্য এবং শেষের ২৪টি বিট হল হোস্ট এর জন্য। Class A আইপি অ্যাড্রেস শুরু হয় 0.0.0.0 থেকে 127.255.255.255 পর্যন্ত। যখন আমাদের নেটওয়ার্কে অনেক বেশি পরিমানে হোস্ট এর প্রয়োজন পরবে তখন আমরা Class A এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে পারি।

Class B (ক্লাস বি)

Class B আইপি অ্যাড্রেসটি শুরু হয় 128.0.0.0 থেকে  এবং শেষে হয় 191.255.255.255 পর্যন্ত। এর প্রথম ১৬টি বিট ব্যবহার করা হয় নেটওয়ার্ক এর জন্য এবং শেষের ১৬টি বিট ব্যবহার করা হয় হোস্ট এর জন্য । যখন আমরদের নেটওয়ার্কে নেটওয়ার্ক ও হোস্ট এর সংখ্যা সমান দরকার তখন আমরা Class B এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে পারি ।

Class C (ক্লাস সি)

Class C আইপি অ্যাড্রেসটি শুরু হয় 192.0.0.0 থেকে  এবং শেষে হয় 223.255.255.255 পর্যন্ত। এর প্রথম ২৪টি বিট ব্যবহার করা হয় নেটওয়ার্ক এর জন্য এবং শেষের ৮টি বিট ব্যবহার করা হয় হোস্ট এর জন্য । যখন আমরদের নেটওয়ার্কে নেটওয়ার্ক এর পরিমান বেশি এবং হোস্ট এর পরিমান কম দরকার সেখানে Class C এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে পারি ।

Class D (ক্লাস ডি)

Class D একটি বিশেষ শ্রেণির আইপি অ্যাড্রেস। এর রেঞ্জ হল 224.0.0.0 থেকে 239.255.255.255 পর্যন্ত। Class D এর আইপি অ্যাড্রেস সবার জন্য উন্মুক্ত না । এই নেটওয়ার্ক এর আইপি অ্যাড্রেস সমুহ Multicast Group এর জন্য ব্যবহার করা হয়।

Class E (ক্লাস ই)

IP address এর 240.0.0.0 থেকে 255.255.255.255 পর্যন্ত রেঞ্জকে বলা  হয় Class E । এই রেঞ্জ এর আইপি অ্যাড্রেস সাধারণত বৈঙ্গানিক গবেষনার জন্য ব্যবহার করা হয়। এখানে 255.255.255.255 আইপি অ্যাড্রেসটি ব্রডকাষ্ট এর জন্য ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও আইপি অ্যাড্রেসকে আরো দুই ভাগে যথা:-
  1. প্রাইভেট আইপি অ্যাড্রেস (Private IP Address)
  2. পাবলিক আইপি অ্যাড্রেস (Public IP Address)

প্রাইভেট আইপি অ্যাড্রেস (Private IP Address)

যে সকল আইপি অ্যাড্রেস নন রাউটেবল অর্থৎ যে সকল আইপি অ্যাড্রেসকে ইন্টারনেট দ্বারা অ্যাকসেস করা যায় না তাকে বলে প্রাইভেট আইপি অ্যাড্রেস। প্রত্যেক ক্লাস এ কিছু প্রাইভেট আইপি অ্যাড্রেস রয়েছে নিন্মে এগুলির রেঞ্জ উল্লেখ করা হল।
  • Class A এর ক্ষেত্রে এর রেঞ্জ হল 10.0.0.0 থেকে 10.255.255.255 পর্যন্ত।
  • Class B এর ক্ষেত্রে এর রেঞ্জ হল 172.16.0.0 থেকে 172.31.255.255 পর্যন্ত।
  • Class C এর ক্ষেত্রে এর রেঞ্জ হল 192.168.0.0 থেকে 192.168.255.255 পর্যন্ত।

No comments:

Post a Comment